Skip to content

মরিচের পাতা কুঁকড়ে যাওয়া রোগ প্রতিরোধে করণীয় – প্রথম পর্ব

আমরা যারা বাসা বাড়িতে গাছ লাগাতে আগ্রহী তারা কম বেশি সবাই বারান্দার টবে বা উঠানে মরিচ গাছ লাগাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। মরিচ পিঁয়াজ, রসুন, আদার মতো অন্যতম এক ধরণের মশলাজাতীয় লতানো উদ্ভিদ।

অনেক সময় দেখা যায় অনেকেই বলে এত যত্নাদির পরেও গাছের পাতা কুঁকড়ে যায় কিন্ত আমরা তার ঠিকঠাক কারণ ধরতে না পারলে ঠিকমতো তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যাবে না ফলে গাছের আরো ক্ষতি হয়ে যাবে। রোগ হলে যেমন সঠিক ওষুধ দেয়া লাগে তেমনি গাছের ক্ষেত্রেও না বুঝে যেকোনো পন্থা অবলম্বন করাও অনেক ক্ষতিকর।

তাহলে এখনই আমরা জেনে নিই কি কি কারণে মরিচ গাছের পাতা কুঁকড়ে যায় এবং আমাদের করণীয় কি?

পাতা কোঁকড়ানো

পাতা কোঁকড়ানো

গাছের পাতা কেন কুঁকড়ে যায়?

মরিচ কিংবা যেকোনো গাছে পাতার কোঁকড়ানো বিভিন্ন সমস্যার থেকে উদ্ভূত হতে পারে। বিভিন্ন কীটপতঙ্গ, ভাইরাস এবং পরিবেশগত সমস্যাই এর প্রধান্তম কারণ।

পাতা কুঁকড়ে যায় প্রধানত তিনটি মারাত্মক পোকার আক্রমণে-

ক) থ্রিপস পোকা

খ) মাকড়

গ) সাদা মাছি

এই কীটগুলোর খাওয়ার কার্যক্রমের জন্য পাতা কুঁকড়ে যায়। প্রাপ্তবয়স্ক পাতার উপর স্পষ্ট দাগ দেখা যায় পরে পাতা শুকিয়ে বা ঝড়ে পরে যায়। তবে খাদ্যের অবস্থানের উপর ভিত্তি করে অনেক সময় কচি বাড়ন্ত পাতা কুকড়ে যায়।

থ্রিপস পোকা

এই পোকাকে চোষী পোকা হিসেবে বেশ পরিচিত। গাছ লাগানোর প্রায় ৭-১০ দিন পরেই এই পোকার আক্রমণ চোখে পরে।

থ্রিপস পোকা

থ্রিপস পোকা

থ্রিপস পোকার লক্ষণ

এই পোকার আক্রমণে মরিচের পাতা কুঁকড়ে যায়। কচি পাতার রস এই থ্রিপস পোকা গাছের কচি পাতা ও ডগার রস শুষে খেয়ে ফলে পাতা উপরের দিকে কুঁকড়ে যায় এবং গাছ দূর্বল হয়ে পরে।

পাতার মধ্যশিরায় আশে-পাশে বাদামী রঙ হয়ে যায় ও শুকিয়ে যায় নতুন বা পুরানো পাতার নিচের পিঠে অনেক ক্ষতি হয় যার ফলে নৌকার খোলের মতো করে পাতা উপরের দিকে কুঁকড়ে যায়। আক্রান্ত পাতা দেখতে বিকৃত দেখায়।

থ্রিপস পোকা দমন ও ব্যবস্থাপনা

১) কুঁকড়ানো পাতার পরিমাণ কম হলে ছিঁড়ে ফেলতে হবে। ক্ষেত পরিষ্কার – পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

২) জোরে জোরে পরিষ্কার পানি স্প্রে করতে হবে।

৩) মরিচ গাছের পাতা কুঁকড়ানো এড়াতে প্রাকৃতিকভাবে ফসল সুরক্ষার পণ্য হলুদ স্টিক ট্র‍্যাপের জুড়ি নেই। চাইলে এই ট্র‍্যাপ ব্যবহার করে পোকা দমন করা যায়।

৪) বালাইনাশক হিসেবে ১ কেজি আধা ভাঙ্গা নিম বীজ ২০ লিটার পানিতে ২৪ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে উক্ত পানি (ছেঁকে নেওয়ার পর) পাতার উপরের দিকে স্প্রে করা।

৫) আন্তঃ ফসল হিসাবে মরিচের সঙ্গে গাজর চাষ করা যেতে পারে।

৬) আক্রমণ বেশি হলে ফিপ্রোনিল (রিজেন্ট/এসেন্ড/গুলি/অন্য নামের) বা ডাইমেথয়েট (বিস্টারথোয়েট/টাফগর/অন্য নামে) ১০ লিটার পানিতে ১০ মিলি হারে বা সাকসেস ১০ লিটার পানিতে ১২ মিলি হারে স্প্রে করে এদের নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

৭) বেশি পোকা দেখা দিলে এডমেয়ার ২০ এসএল ০.৫ মিলি./লি হারে পানিতে শিশিয়ে স্প্রে করা।

৮) চারা রোপনের ১০-৩০ দিনের মধ্যে তিন বার ১০ দিন অন্তর অন্তর এই পোকা দমনের জন্য প্রতি ১০ লিটার পারিতে ৫মিলি এ্যাডমায়ার/টিডো/গেইন ঔষধ প্রতি ৫ শতক জমিতে স্প্রে করতে হয়।

পরবর্তী পর্ব পড়তেঃ মরিচের পাতা কুঁকড়ে যাওয়া রোগ প্রতিরোধে করণীয় – দ্বিতীয় পর্ব

Suriya Jaman Barsha
Follow Me

1 thought on “মরিচের পাতা কুঁকড়ে যাওয়া রোগ প্রতিরোধে করণীয় – প্রথম পর্ব”

    Advertisements
  1. Pingback: পেঁয়াজের রোগ-বালাই ও এর দমন ব্যবস্থা – পর্ব ১ | Greeniculture

Comments are closed.