Skip to content

পেঁয়াজের রোগ-বালাই ও এর দমন ব্যবস্থা – পর্ব ২

আগের পর্বের পরে…

পেঁয়াজের ঘোরা পোকা

লক্ষণ

পাতার সবুজ অংশ খেয়ে ক্ষতি করে।

ব্যবস্থাপনা

  • পাতায় ডিম / পোকা দেখলে তা তুলে ধ্বংস করতে হবে। 
  • ভালভাবে পোকা দমন করতে হলে ক্ষেতের আশে পাশে বা অন্য আগাছা থাকলে তা পরিস্কার করে ফেলতে হবে।
  • ভালোভাবে জমি চাষ দিয়ে পাখিদের পোকা খাবার সুযোগ করে দিন। 
  • পাখিএসিমিক্স ৫৫ ইসি ১০ মিলি প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে।
  • আক্রমণ বেশি হলে- ফাইটার ২.৫ ই সি ১০ মিলি প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে। 
  • ১০ দিন পরপর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
  • বসার জন্য ক্ষেতে ডালপালা পুতুন।

পেঁয়াজের থ্রিপস রোগ

লক্ষণ

পোকা গাছের কচি পাতা ও পুষ্পমঞ্জুরির রস শুষে খেয়ে গাছকে দুর্বল করে ফেলে। এদের আক্রমণের কারণে পাতায় বাদামি দাগ হয় ।

ব্যবস্থাপনাঃ

  • হলুদ রঙের ফাঁদ ব্যবহার করা।
  • তামাকের গুড়া (১০গ্রাম), সাবানের গুড়া (৫গ্রাম) ও নিমের পাতার নির্যাস প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ব্যবহার করা।
  • ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক যেমন: এডমেয়ার ২০ এসএল ০.৫ মিলি./লি হারে পানিতে শিশিয়ে।

করনীয়ঃ

 ক্ষেত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

আগের পর্ব পড়তেঃ পেঁয়াজের রোগ-বালাই ও এর দমন ব্যবস্থা – পর্ব ১

পেঁয়াজের হোয়াইট রট পোকা

লক্ষণ

  • এ রোগের আক্রমণে পুরাতন পাতা হলুদ হয়ে নেতিয়ে পড়ে।
  • শিকড় ও কন্দের বাইরের আবরনে পচন ধরে। একধরণের ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়।

ব্যবস্থাপন

  • প্রাথমিক অবস্থায় আক্রান্ত গাছ সংগ্রহ করে ধ্বংস করা। ২। সুষম সার প্রয়োগ ও পরিচর্যা করা । ৩। ছত্রাকনাশক দ্বারা এ রোগ দমন করা কঠিন, তবে রোভরাল, ডাইথেন এম ৪৫, রিডোমিল গোল্ড এমজেড ইত্যাদি পর্যায়ক্রমে পরিবর্তন করে (২ গ্রাম/ লি. হারে পানিতে মিশিয়ে ) ব্যবহার করলে কিছুটা ফল পাওয়া যেতে পারে।

করনীয়

১. ক্ষেত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

২. জমিতে কয়েকবার পেঁয়াজ/ রসুন ছাড়া অন্য ফসল চাষ করে আবার রসুন / পেঁয়াজ চাষ করা ভালো ।

পেঁয়াজের ব্ল্যাক স্টক রট রোগ

লক্ষণ

  • এ রোগের আক্রমণে বীজকান্ডে হলুদ হতে তামাটে দাগ দেখা যায়।
  • আক্রান্ত বীজ কান্ডে ছত্রাকের ঘন আবরণ দেখা যায়। এক সময় বীজকান্ড ভেঙ্গে যায়। একধরণের ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়।

ব্যবস্থাপনা

  •  আক্রান্ত পাতা ও বীজকান্ড ছাটাই করে ধ্বংস করা।
  •  সুষম সার প্রয়োগ ও পরিচর্যা করা ।
  •  প্রোপিকোনাজল গ্রুপের ছত্রাক নাশক যেমন: টিল্ট ১০ লি. পানিতে ৫ মি.লি. মিশিয়ে ১২ দিন পরপর ২ বার স্প্রে করা।
  • থ্রিপস দমনের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ।

করনীয়

১. ক্ষেত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

২. জমিতে কয়েকবার পেঁয়াজ/ রসুন ছাড়া অন্য ফসল চাষ করে আবার রসুন / পেঁয়াজ চাষ করা ভালো।

পেঁয়াজের বোট্রাইটিস ব্লাইট রোগ

লক্ষণ

  • এ রোগের আক্রমণে পাতায় সবুজাব আবরণে ঘেরা সাদাটে দাগ দেখা যায় ।
  • আক্রান্ত পাতা উপর থেকে মরে যেতে পারে। একধরণের ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়।

ব্যবস্থাপনা

  • সুষম সার প্রয়োগ ও পরিচর্যা করা ।
  • প্রোপিকোনাজল গ্রুপের ছত্রাক নাশক যেমন: টিল্ট ১০ লি. পানিতে ৫ মি.লি. মিশিয়ে ১২ দিন পরপর ২ বার স্প্রে করা।
  • রোভরাল, ডাইথেন এম ৪৫, রিডোমিল গোল্ড এমজেড ইত্যাদি পর্যায়ক্রমে পরিবর্তন করে ব্যবহার করলে ভাল ফল পাওয়া যায়।

করনীয়

১. ক্ষেত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

২. এমনভাবে পেঁয়াজের সারি এমনভাবে লাগান যাতে প্রতিটি গাছ সর্বোচ্চ আলো বাতাস পায়।

পেঁয়াজের লিফ ব্লচ রোগ

লক্ষণ

  • এ রোগের আক্রমণে পাতার শিরা বরাবর লম্বা দাগ দেখা যায়।
  • আক্রান্ত পাতার উপর ছত্রাকের গাঢ় বাদামি আবরণ দেখা যায়।

ব্যবস্থাপনা

  • ক্ষতে পরিষ্কার পরচ্ছিন্ন রাখতে হবে।
  • জমিতে কয়েকবার পেঁয়াজ/ রসুন ছাড়া অন্য ফসল চাষ করে আবার রসুন / পেঁয়াজ চাষ করতে হবে।
  • অতি ঘন করে পেঁয়াজ চাষ করা যাবে না।
  • একই জমিতে বার বার পেঁয়াজ / রসুনরে চাষ করা যাবে না।
  • আক্রান্ত পাতা ও বীজকান্ড ছাটাই করে ধ্বংস করা।
  • সুষম সার প্রয়োগ, সেচ প্রদান ও পরিচর্যা করা ।
  • প্রোপিকোনাজল গ্রুপের ছত্রাক নাশক যেমন: টিল্ট ১০ লি. পানিতে ৫ মি.লি. মিশিয়ে ১২ দিন পরপর ২ বার স্প্রে করা।
  • আদ্র ও উষ্ণ আবহাওয়া বিরাজ করলে রুটনি স্প্রে ছাড়াও ঘন ঘন স্প্রে করতে হবে।
  • রোভরাল, ডাইথেন এম ৪৫, রিডমিল গোল্ড এমজেড ইত্যাদি র্পযায়ক্রমে পরিবর্তন করে ব্যবহার করলে ভাল ফল পাওয়া যায়।

করনীয়

১. ক্ষেত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

২. এমনভাবে পেঁয়াজের সারি এমনভাবে লাগান যাতে প্রতিটি গাছ সর্বোচ্চ আলো বাতাস পায়।

আরও পড়ুনঃ পুঁই শাকের রোগ-বালাই ও এর দমন কৌশল

পেঁয়াজের এরিওফাইট মাকড়

লক্ষণ

  • অতি ক্ষুদ্র মাকড়ের আক্রমণে পেঁয়াজের পাতা কুঁকড়িয়ে জড়িয়ে যায় এবং বাদামি রং ধারণ করে।
  • কন্দের আকার ছোট হয়ে ফলন কম হয় ।

ব্যবস্থাপনা

  • আক্রান্ত গাছ সংগ্রহ করে নষ্ট করা ।
  • লক্ষণ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানিতে অনুমোদিত মাকড়নাশক যেমন: সালফেক্স ১.৫ গ্রাম বা সানমাইট ৩ মিলি. বা ওমাইট ২ মিলি. হারে মিশিয়ে স্প্রে করা ।

করনীয়

ক্ষেত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।