সালাদ খেতে কে না ভালোবাসে! এটি সালাদ তৈরিতে টমেটো একটি অপরিহার্য সবজি। টমেটো সালাদকে দেখতে আকর্ষণীয় করে তুলে এছাড়াও সালাদের স্বাদ ও পুষ্টিমান অনেকগুণ বাড়িয়ে তোলে। টমেটো দিয়ে সস,স্যুপ, তরকারি তৈরি করা যায়।টমেটোতে আমিষ, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, সি, ক্যারাটিন, পটাশিয়াম, লৌহ, ফসফরাস ও রিবোফ্লেভিন আছে। প্রতি ১০০ গ্রাম টমেটোতে ২৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি রয়েছে। সৌন্দর্য চর্চায় টমেটো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর করতে সাহায্য করে। প্রাকৃতিক ব্লিচিং গুন আছে টমেটোতে। টমেটোকে আমরা সবাই শীতকালীন সবজি হিসেবে জানি। মজার বিষয় হল বর্তমানে গ্রীষ্মকালেও টমেটো চাষ করা যায়। আপনার বাসার ছাদেই খুব সহজেই গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করতে পারবেন।
গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করার জন্য বারোমাসি টমেটোর জাত বেছে নিতে হবে। বারি টমেটো-৬(চৈতী)একটি বারোমাসি টমেটোর জাত। চেরি টমেটোর চাষ পদ্ধতি জানুন।
চাষের পদ্ধতি
টবে অথবা ড্রামে অথবা ছোট কন্টেইনার অথবা ছোট প্লাস্টিকের প্যাকেটে টমেটোর চাষ করা যায়।
টমেটো দুই উপায়ে চাষ করা যায়
ক) টমেটোর চারা টবে অথবা ড্রামে অথবা ছোট কন্টেইনার অথবা ছোট প্লাস্টিকের প্যাকেটে স্থাপন করার মাধ্যমে। কিংবা
খ) টমেটোর বীজ ভেজা মাটিতে স্থাপন করার মাধ্যমে।
টমেটোর চারা দিয়ে করতে চাইলে
চারাটি প্রস্তুতকৃত মাটিতে স্থাপন করুন। একটি পাত্রে সর্বোচ্চ একটি চারা রোপণ করা যাবে।
চারা গাছের গোড়ায় পানি জমতে দেয়া যাবে না। চারাগাছটিকে শক্ত কাঠির সাথে বেঁধে দিতে হবে।
বীজের মাধ্যমে করতে চাইলে
ভাল জাতের বীজ কিনে আনুন। টবের মাটি একটু পানি দিয়ে ভিজিয়ে নিন। বীজ ছিটিয়ে দিন। অঙ্কুরোদগমের পর চারা বড় হতে শুরু করলে প্রচুর পরিমাণে সূর্যের আলো গাছে প্রবেশ করে এরকম স্থানে টব অথবা ড্রাম অথবা ছোট কন্টেইনার অথবা ছোট প্লাস্টিকের প্যাকেট যেটায় চারা আছে তা স্থাপন করুন। গাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি দিতে হবে। চারাগাছকে কমপক্ষে ৬/৭ ঘন্টা রোদের নিচে রাখতে হবে। টমেটো খাই, সুস্থ থাকি।
মাটি প্রস্তুতিতে
বেলে দোআঁশ মাটিতে সবচেয়ে বেশি ফলন হয়।তাই উর্বর বেলে দোআঁশ মাটি চাষের জন্য নির্বাচন করতে হবে। প্রথমে ৩ভাগ মাটি নিন এতে একভাগ গোবর ও টিএসপি সার মিশিয়ে নিন।১০-১৫ দিন ফেলে রাখতে হবে।এরপর টবে অথবা ড্রামে অথবা ছোট কন্টেইনার অথবা ছোট প্লাস্টিকের প্যাকেটে প্রস্তুতকৃত মাটি পরিপূর্ণ ভাবে ভরে দিন।এরপর চারা রোপণ বা বীজ বোপন করুন।চারা বড় হলে ১চাচামচ টিএসপি সার দিতে হবে। মাটি কয়েক দিন পর পর আলগা করতে হবে।ফুল ধরা শুরু করলে সরিষার খৈল পচা পানি পাতলা করে গাছে ১০-১২ দিন পর পর প্রয়োগ করতে হবে। মাটিতে সঠিক আদ্রর্তা বজায় রাখতে শুকনো পাতা বা শাকসবজির উচ্ছিষ্ট খোসা সার হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
পোকামাকড় ও রোগবালাই দমন
টমেটো গাছের পাতা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে পাতা কুঁকড়ে যায়। এছাড়াও এই রোগ সুস্থ গাছে ছড়িয়ে পড়ে। যেহেতু ভাইরাসজনিত রোগ প্রতিরোধের কোন ওষুধ নাই তাই আক্রান্ত গাছ পেলে তা নষ্ট করে ফেলতে হবে।তবে হোয়াইটফ্লাই দ্বারা ভাইরাস জনিত সমস্যা দেখা দেয়।তাই এ পোকা দমন করতে হলে গাছকে জাল বা মশারি দিয়ে আবৃত করে দিতে হবে।
ভাল ফলন পাওয়ার জন্য পরামর্শ
১. টবে অথবা ড্রামে অথবা ছোট কন্টেইনার অথবা ছোট প্লাস্টিকের প্যাকেটের সবটুকু মাটি দিয়ে ভরাট করুন।এতে গাছের ফলন ভালো হয়।
২. পর্যাপ্ত সূর্যের আলোয় গাছ রাখতে হবে।
৩. নিয়মিত গাছে পানি দিতে হবে।
টমেটো খুবই উপকারী একটি সবজি। তাই আপনার বাড়ির ছাদে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করলে শীতকালে ছাড়াও গ্রীষ্মকালে টমেটোর স্বাদ উপভোগ করতে পারবেন।
- জেনে নিন গোল মরিচের ১০ টি চমৎকার উপকারিতা - September 11, 2020
- মালবেরি বা তুঁত চাষ পদ্ধতি - May 23, 2020
- ছাদবাগানে আম চাষ – আম গাছের জোড় কলম পদ্ধতি - March 20, 2020