
ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন রান্নায় বেগুনের ফল ব্যবহার করা হয়। বেগুন মধুর, তীক্ষ্ণ ও উষ্ণ। পিত্তনাশক, জ্বর কমায়, খিদে বাড়ায় এবং পরিপাক করা সহজ। বেগুন ভর্তা, বেগুন পোড়া, এবং বেগুনীবানাতে এর ব্যবহার রয়েছে। বিশেষত বাংলাদেশে ইফতারের জন্য বেগুনী একটি জনপ্রিয় খাবার। বেগুন এর ভর্তা অনেক জনপ্রিয়। এটি গ্রামবাংলার অনেক সুস্বাদু খাবার। তাছাড়াও বেগুনের আরো কিছু গুন আছে।
- ক্যান্সার প্রতিরোধ বেগুন পাকস্থলী, কোলন, ক্ষুদ্রান্ত্র, বৃহদ্রান্ত্রের ক্যানসারকে প্রতিরোধ করে।
- ক্ষতিকর কোলেস্টেরল দূর করে: কোলেস্টেরল হলো একধরণের চর্বি, যা রক্তে জমে। বেগুনে কোন কোলেস্টেরল নেই। যাদের রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমান বেশি, তাদের জন্য বেগুন আদর্শ খাদ্য।
- রক্তশুন্যতা দূরীকরণ বেগুনে আছে প্রচুর পরিমাণ আয়রন। আয়রন শরীরে রক্ত বাড়াতে সহায়তা করে। তাই রক্ত শূন্যতার রোগীরা খেতে পারেন এই সবজি।
- মুখের ঘা প্রতিরোধ করে: বেগুনে আছে রিবোফ্ল্যাভিন। রিবোফ্ল্যাভিন মুখ ও ঠোঁটের কোণের ঘা, জিহ্বার ঘা প্রতিরোধ করে। জ্বর হওয়ার পর মুখের বিস্বাদও দূর করে বেগুন।
- ক্ষতস্থান শুকাতে সাহায্য করে: বেগুন ক্ষত স্থান দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে। বেগুনে আছে প্রচুর পরিমান ভিটামিন ‘ই’ এবং ‘কে’। এরা শরীরের ভেতর রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয়।
- চোখের রোগে বেগুন: বেগুন ভিটামিন এ সমৃদ্ধ সবজি। বেগুনের ভিটামিন ‘এ’ চোখের জন্য খুব উপকারী।
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: বেগুনে আছে প্রচুর পরিমান ডায়াটারি ফাইবার বা আঁশ। যা খাবার হজমে সাহায্য করে।
- দাঁত ও হাড়ের যত্নে: বেগুনে আছে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম। এই দুই উপাদান দাঁত, হাড় ও নখের জন্য খুব উপকারী। ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম দাঁতকে করে মজবুত, মাড়িকে করে শক্তিশালী। নখের ভঙ্গুরতা রোধ করে।
- জিঙ্কের ঘাটতি দূর করে: ডায়রিয়া হলে শরীরে প্রচুর জিঙ্কের ঘাটতি দেখা দেয়। বেগুন জিঙ্কের ঘাটতি দূর করে। তবে ডায়রিয়া চলাকালিন সময়ে বেগুন খাওয়া ঠিক না। ডায়রিয়া ভালো হলে বেগুন খাওয়া উচিত।
বেগুনের আয়ুর্বেদিক ব্যবহার
যুগ যুগ ধরে বেগুনের রয়েছে নানা রকম আয়ুর্বেদিক ব্যবহার। নানা রোগে বেগুন ঔষধ হিসাবে কাজ করে।
- রোজ সকালে খালি পেটে কচি বেগুন পুড়িয়ে গুড় মিশিয়ে খেলে ম্যালেরিয়ার ফলে লিভারের যে ক্ষতি হয় সেটা ভালো হয়।
- বেগুন অনিদ্রা রোগ দূর করে। বেগুন খেলে ভালো ঘুম হয়। এর জন্য বেগুনের আর নাম হল নিদ্রালু। যাদের ঘুমের সমস্যা আছে তারা সন্ধ্যায় সামান্য বেগুন পুড়িয়ে মধু মিশিয়ে খেলে রাতে ভালো ঘুমাতে পারবেন।
- নিয়মিত বেগুন খেলে প্রসাবের জ্বালাপোড়া কমে। প্রস্রাব পরিষ্কার করে প্রারম্ভিক অবস্থার কিডনির পাথরও নাকি গলিয়ে দিতে পারে বেগুন।
- বেগুন একেবারে পুড়িয়ে ছাই করে সেই ছাই বা ভস্ম গায়ে মাখলে চুলকানি ও চর্মরোগ সারে।
- কচি ও শাসালো বেগুন খেলে জ্বর সারে।
- বেগুনের রসে মধু মিশিয়ে খেলে কফজনিত রোগ দূর হয়।
- বেগুন বীর্যের পরিমাণ বাড়ায়।
- এ্যাসিডিটির সমস্যা থাকলে বেগুনে উপশম হয়।
- মহিলাদের ঋতু নিয়মিত করে।
Sadiya Jaman Nisha
Creative Writer at Greeniculture
Storyteller । Math Olympiad Runners up । Business Enthusiastic
Latest posts by Sadiya Jaman Nisha (see all)
- বেলি ফুল - May 30, 2019
- নয়নতারা পরিচিতি ও গুণ কথন - May 29, 2019
- বেগুনের স্বাস্থ্য ও আয়ুর্বেদিক গুণাগুণ - May 28, 2019
Facebook Comments