আমরা অনেকেই জানি যে পেঁপে কতটা স্বাস্থ্যকর ফল কিন্তু এর পাতাকে সবাই উপেক্ষা করে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল এর পাতা বিভিন্ন অসুখ নিরাময়ের কাজে খুবই কার্যকরী।
পেঁপের পাতা এর ফলের মতন সুস্বাদু না, বেশ তেতো হয়, যা ভালোর জন্যই হয়। স্বাদে তেতো কারণ এর পাতার মধ্যে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস যা থেরাপির জন্য খুবই উপকারী। পেঁপে পাতার মধ্যে অবিশ্বাস্য পুষ্টিগুণ পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ফেনলিক উপাদান আরও আছে পেপেইন ও অ্যালকালয়েড। যা একত্রে শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি করে এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
পেপেইন ও আরেকটি উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত কাইমোপেপেইন যা আমিষ হজমে খুবই কার্যকরী এবং হজম সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিস রোগের মহৌষধ
পেঁপে পাতা নিম্নোক্ত কারণগুলো জন্য পেঁপে পাতার রস ডায়াবেটিসের জন্য খেতে পারেন।
ক) গ্লুকোজ কমাতে পেঁপে পাতা খুবই কার্যকরী।
খ) পেঁপে পাতায় আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ডায়াবেটিস জটিলতার পাশাপাশি ফ্যাটি লিভার রোগ, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং কিডনি নষ্টের ঝুঁকি কমায়।
গ) ডায়াবেটিস এর কারণে দেহে ক্ষত হলে তা দেরিতে শুকায় ফলে নানারকম জটিলতা দেখা দেয়। পেঁপে পাতার রস ক্ষত স্থানে দিলে ক্ষত খুব তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে। এজন্য ধন্যবাদ এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদানকে। আরও পড়ুন আদার ভেষজ গুণ।
ডেঙ্গু প্রতিরোধী পেঁপে পাতা
ডেঙ্গু রোগ বা হাড়ভাঙা রোগ হচ্ছে সর্বনাশা রোগ যখন এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। মশা কামড়ের পাঁচ থেকে সাত দিন পর রোগের লক্ষণগুলো হল মাথাব্যথা, মারাত্মক পরিমাণে তন্দ্রা, প্রচন্ড জ্বর, মাংসপেশীতে প্রচন্ড ব্যথা ও গিঁটে ব্যথা।
যদিও ডেঙ্গু রোগের আক্রান্ত হওয়ার কোটি কোটি ঘটনা আছে কিন্তু ওষুধ নির্ভর চিকিৎসা এখন পর্যন্ত নেই। যাইহোক, এটি আপনাদের জন্য সুখবর যে বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের পেঁপে পাতার রস দ্বারা চিকিৎসা করতে পারবেন।
ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগীদের রোগ উপশমে পেঁপে পাতার রসের কার্যকারীতা সম্পর্কে অনেক গবেষণা হয়েছে, তার মধ্যে একটি হল একজন শ্রীলঙ্কান ডাক্তারের। পেঁপে পাতার রস দিয়ে যেভাবে ডেঙ্গু প্রতিরোধী টোটকা তৈরি করবেন।
ক) তাজা পেঁপে পাতা সংগ্রহ করুন। গাছের নিম্নভাগে কচি পাতা পাওয়া যায় যা এই রেসিপির জন্য খুবই চমৎকার।
খ) পাতা সংগ্রহের পূর্বে নিশ্চিত হয়ে নিন গাছটিতে ফল ধরে কিনা কারন কিছু গাছ দেখতে পেঁপে গাছের মত হলেও তা আসলে বিষাক্ত।
গ) সংগৃহীত পাতাগুলো ভালোকরে ধুয়ে নিন এবং যে পাতা গুলো পুরোপুরি সবুজ নয় সেগুলো সরিয়ে ফেলুন।
ঘ) আঁশযুক্ত কান্ড অপসারণ করুন।
ঙ) যদি আপনার কাছে জুসার থাকে তাহলে রস বানানো খুবই সহজ হবে। পাতাগুলোকে জুসার এ ঢেলে দিন। যদি আপনার কোন যন্ত্রপাতি না থাকে তবে পাতাগুলোকে ভালকরে ছিঁড়ে, পিষে রসটুকু চেপে বের করে নিন।
একটি পাতা পিষলে এক টেবিল চামচ রস পাবেন। দৈনিক দুইবার বা প্রতি ছয় ঘণ্টা অন্তর অন্তর খালি পেটে পান করুন। আপনি চাইলে পানিতে সাথেও মিশিয়ে খেতে পারেন এবং এ রস পান করার ফলে কিছু দিনের মধ্যেই চমৎকার ফলাফল পাবেন।
বি.দ্র. – পেঁপে ডেঙ্গু বা তদ্রূপ রোগসমূহের কোনো অনুমোদিত মেডিসিন নয়। তবে পেঁপের স্বাস্থ্য উপকারিতা ও এর মধ্যে অবস্থিত কেমিক্যাল স্বাস্থ্যের জন্যে ঝুকিপূর্ণ নয়। এই লেখাটি কোনো পিয়ার রিভিউড জার্নাল কর্তৃক স্বীকৃত নয়।
- জেনে নিন গোল মরিচের ১০ টি চমৎকার উপকারিতা - September 11, 2020
- মালবেরি বা তুঁত চাষ পদ্ধতি - May 23, 2020
- ছাদবাগানে আম চাষ – আম গাছের জোড় কলম পদ্ধতি - March 20, 2020