আমের মাজরা পোকা (Mango Stem Borer) আমগাছের অন্যতম প্রধান শত্রু। এটি শুধুমাত্র আমগাছের ক্ষতি করেনা বরং কাঁঠাল, ডুমুর, তুণ্ড, পেঁপে এবং আপেল গাছের মারাত্মক ভাবে ক্ষতি ও করে থাকে। মাজরা পোকা জীবিত অথবা মৃত উভয়ে গাছের ক্ষতিসাধন করে থাকে। প্রায় সকল আমবাগনই মাজরাপোকার আক্রমণের শিকার হয়।
মাজরা পোকার লার্ভা দেখতে হলুদাভ সাদা, মাংসল দেহ ও ৬ সে.মি. গাঢ় রঙের মাথা বিশিষ্ট হয়। পূর্নাঙ্গ কীট ৫ সে.মি. লম্বা ও হলুদাভ বাদামী রঙের হয়ে থাকে।এরা সারাবছরই সক্রিয় থেকে গাছকে আক্রমণ করে।
আক্রমণের কৌশল
এদের কীড়া গাছের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। কীড়া গাছের বাকলে আঁকাবাঁকা গর্তের মাধ্যমে চলাচল এর পথ তৈরি করে, প্রধান কাণ্ডের ভিতর সুরঙ্গ তৈরি করে এবং প্রধান কান্ডের ভিতরে থাকা টিস্যু খেয়ে ফেলে। পূর্নাঙ্গ কীট তরুণ পল্লবের বাকল ও বোঁটা খায় এবং নেতিয়ে পড়া বাকলে ডিম দেয়।
আরও পড়ুনঃ আমের হপার পোকার আক্রমণের প্রতিকার
রোগের লক্ষন
কীড়া গাছের কোমল কাষ্ঠ আক্রমণ করলে আক্রান্ত গাছটি মারা যায় বা শুকিয়ে যায়। পোকার আক্রমণ তখনই বুঝতে পারা যায় যখন গাছের শাখাপ্রশাখা থেকে পাতা ঝরতে শুরু করে এবং গাছটি একদম শুকিয়ে যায়।
প্রতিকারের উপায়
ক) কীড়াযুক্ত ও মৃত শাখা-প্রশাখা কেটে ফেলে দিতে হবে এবং আগুনে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
খ) যদি গাছটি কোন প্রতিরোধী জাত থেকে থাকে তবে তা রোপণ করা।
গ) গাছের নেতিয়ে পড়া বাক এবং শুকিয়ে যাওয়া শাখা-প্রশাখা কান্ড থেকে আলাদা করে নিতে হবে।
ঘ) কার্বন বাই সালফাইড, ক্লোরোফর্ম বা পেট্রোল এ তুলার বল ভিজিয়ে গাছের আক্রান্ত স্কন্ধ মুছে নিতে হবে।
ঙ) গাছের গর্তের মধ্যে ইঞ্জেকশন এর মাধ্যমে কেরোসিন ঢেলে দিতে হবে।
চ) বিকল্প বাহক যেমন- মরিঙ্গা, সিল্ক কটন গাছকে নির্মূল করতে হবে।
ছ) Carbaryl 50WP প্রতি এক লিটার পানিতে ২০ গ্রাম মিশিয়ে স্কন্ধ এর মূল অংশ থেকে শুরু করে ৩ ফিট উঁচু পর্যন্ত দিতে হবে যাতে পূর্নাঙ্গ কীট ডিম না পারে।
জ) Carbofuran3G প্রতি গর্তের ভিতর ও গাছের আশেপাশে থাকা মাটিতে ৫ গ্রাম করে দিতে হবে।
ঝ)Methyl Parathion 50EC এক লিটার পানিতে ০.২% মিশিয়ে গর্তে ও গাছের আশেপাশের মাটিতে দিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ আমের বোঁটা পচা রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
- জেনে নিন গোল মরিচের ১০ টি চমৎকার উপকারিতা - September 11, 2020
- মালবেরি বা তুঁত চাষ পদ্ধতি - May 23, 2020
- ছাদবাগানে আম চাষ – আম গাছের জোড় কলম পদ্ধতি - March 20, 2020