করোসল বাংলাদেশের একটি অপরিচিত ফল। ২০১৫ সালে অবসরপ্রাপ্ত এক সেনাকর্মকর্তা নীলফামারীতে প্রথম চাষ শুরু করেন এই বিশেষ ঔষধি গুণসম্পন্ন ফলটি। ২ একর জমিতে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার সহায়তায় বেশ সাফল্যও লাভ করেন তিনি। এই ফলটিকে বলা হয় ক্যান্সারের প্রাকৃতিক কেমোথেরাপি।
জাপানের গবেষকরা প্রথম এই ফলের ক্যান্সার প্রতিরোধী ঔষধি গুণের ব্যাপারে ধারণা পায়। এরপর ধীরে ধীরে এই ফলটি সারা পৃথিবীতে বাণিজ্যিকভাবে ব্যাপকতা লাভ করে।
করোসল জাপানে toge-ban-rishi নামে অভিহিত করা হয়। এটিকে জাপানে খাবার দইয়ের পরিবর্তে বিক্রি করা হয়। এর স্বাদ অনেকটা খাবার দইয়ের মতো হয়ে থাকে।
করোসলের পুষ্টি ও ক্যান্সার প্রতিরোধী গুণ
করোসল ফলের ক্যান্সার প্রতিরোধী গুণাগুণ মানুষ প্রথম জানতে পারে ১৯৭৬ সালে। গবেষণায় করোসলে এমন কিছু কেমিক্যাল পাওয়া গেছে যা কিনা কেমোথেরাপিতে ব্যবহৃত Adriamycin থেকে দশ হাজার গুণ বেশি কার্যকর।
করোসল গাছের ফল, পাতা, বাকল সবকিছুই অবিশ্বাস্যভাবে প্রাকৃতিক ক্যান্সার কোষ প্রতিরোধী। অন্যদিকে, করোসল ফল গ্রহণে কেমোথেরাপির মতো চুল পড়ে না, উপরন্তু ক্যান্সার কোষ দমনকারী। প্রচলিত মেডিক্যাল চিকিৎসা সেবার মতো ক্যান্সার প্রতিরোধে এই ফলের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াই নেই।
আরও পড়ুনঃ বাগানে চাষ করুন করোসল
করোসল এ প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে। এর এন্টিব্যাকটেরিয়াল সক্ষমতার জন্যে এর থেকে তৈরি তেলকে ব্রণ ও ফোঁড়া প্রতিরোধে ব্যবহার করা হয়। এই তেল প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ যেমন ফ্ল্যাভোনয়েডোস, পলিফেনল ও স্যাপনিন্স। এরা এন্টি এজিং প্রতিরোধে সহায়তা করে।
করোসল তেল শিষ ও ফাটা ত্বকে লোশন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও একজিমা ও সোরিয়াসিস উপসর্গে এটি অত্যন্ত কার্যকরী। এই তেল সামাদের ত্বকে সরাসরি ব্যবহার করা সম্ভব। এই তেল খুব হালকা ও সুগন্ধযুক্ত।
করোসল কিভাবে খাবেন
করোসল অন্যান্য ঔষধি ফলের মতো তীব্র ও কটূ গন্ধযুক্ত। এর কাঁটাযুক্ত বহিরাবরণ খাওয়ার অনুপযোগী।
চামড়া তুলে ফেলে এর ভেতরের অংশ চামচ দিয়ে তুলে খাওয়া যায়। তরমুজের মতো বীজ ফেলে দিয়ে খেতে হয়। এছাড়াও এটি খুব বিষাক্ত। এর বীজ খুব দামী, ফেলে না দিয়ে নতুন চারা তৈরি করতে পারেন।
করোসল ফ্রিজিং করে এটি দিয়ে পানীয় তৈরি করা যায়। এছাড়াও পশ্চিমা দেশে ডেজার্ট তৈরিতেও এটি ব্যবহার করা হয়।
অর্থনৈতিক গুরুত্ব
করোসল ফল এখনো বাণিজ্যিকভাবে বাংলাদেশে চাষ করা হয়নি। তবে বাগানভিত্তিক গ্রুপগুলোর মাধ্যমে দেশে এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। এর ক্যান্সার প্রতিরোধী ঔষধি গুণের দরুণ এটি এখন অভিজাত মানুষদের খাদ্য তালিকায় যুক্ত হচ্ছে। বিভিন্ন সিন্ডিকেট এই সুযোগে একেকটি চারার মূল্য দুই থেকে দশ হাজার পর্যন্ত রাখছে। একটি ২৫০ গ্রাম ফলের দাম ৪৫০০০ পর্যন্ত গিয়ে ঠেকছে। তাই এখন বাংলাদেশে বেশ সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে এই বিশেষ ফলটি।
- বাংলাদেশে পঙ্গপাল আক্রমণের সম্ভাবনা - July 10, 2020
- রকমেলন চাষ ও এর পরিচর্যা - July 6, 2020
- ঘরোয়া উদ্ভিদের রোগ-বালাই নিয়ন্ত্রণ – দ্বিতীয় পর্ব - July 3, 2020
আস্সালামুআলাইকুম,করোসল গাছ প্রয়োজন।
কিভাবে পেতে পারি???