আম একটি সুস্বাদু ফল। জলবায়ুগত কারণে বাংলাদেশ আম চাষের জন্যে বেশ উপযোগী। এখানে বিভিন্ন জাতের আম প্রতিবছর পাওয়া যায়। আম প্রধানত গ্রীষ্মকালীন ফসল। যদিও বর্তমানে বারোমাসী আমের সফলভাবে চাষ হচ্ছে ছাদবাগানে। অনেকেই আগ্রহ নিয়ে বারোমাসী সুস্বাদু আম নিজেদের ছাদ, আঙ্গিনায় লাগিয়ে পরিচর্চা করে।
ঋতুকালীন আমের জন্যে এইমুহূর্ত সবচেয়ে সংকটাপন্ন সময়। এখন আমের গাছে গাছে মুকুল দেখা দেয়। এইজন্যে বিভিন্ন রোগ-বালাই ও পোকা-মাকড় খুব সহজেই কমিয়ে দিতে পারে আমের ফলনকে। এইজন্যে আমচাষীদের বেশ সতর্ক থাকতে হয় এইসময়ে। বোঁটা পচা রোগের কারণে প্রতিবছর পাকার আগেই অকালে আম ঝড়ে পড়ে। আজকে আমরা আমের বোঁটা পচা রোগের প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করব।
আরও পড়ুনঃ আমের মুকুল ঝরা প্রতিরোধের উপায়
লক্ষণ
গাছ থেকে আম পেড়ে পাকানো শুরু করলে মাঝে মাঝে বোঁটা পচা রোগের লক্ষণ দেখা যায়। শুরুতে বোঁটায় বাদামি অথবা কালো দাগের আবির্ভাব হয়। ধীরে ধীরে বাদামী/ কালো দাগ দ্রুত বাড়তে থাকে এবং গোলাকার আকৃতির হয়ে ছড়িয়ে পড়ে বোঁটার চারদিকে। এর ফলে তখন মাইক্রো অর্গানিজম ফলের ভেতরে আক্রমণ করে পচিয়ে ফেলে। আক্রান্ত আম ২/৩ দিনের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায়। রোগের জীবাণু বোঁটা ছাড়াও অন্যান্য আঘাতপ্রাপ্ত স্থান দিয়ে আমের ভেতরে প্রবেশ করে আম পচিয়ে ফেলতে পারে।
প্রতিকার
রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে গাছ থেকে আম পাড়তে হবে। আম পাড়ার সময় যাতে আঘাত না পায় সেদিকে খেয়াল রেখে আম পাড়তে হবে। বোঁটাসহ আম পাড়লে এ রোগের আক্রমণ অনেকটা কমে যায়। এক্ষেত্রে ৫ সেমি./ (২ ইঞ্চি) আকৃতির বোঁটা সহ হলে ভাল হয়। আম পাড়ার পর গাছের তলায় আম জমা না রেখে দ্রুত সেই জায়গা থেকে সরিয়ে ভাল জায়গা রাখতে হবে। বোঁটা পচা রোগের আক্রমণ অনেকাংশে কমাতে আম পাড়ার পর পর সেই আম গরম পানিতে (৫৫০ সে. তাপমাত্রার পানিতে ৫-৭ মিনিট) অথবা বাভিস্টিন দ্রবণে (প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম) ৫ মিনিট ডুবিয়ে রাখার পর গুদামজাত করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ আমের হপার পোকা আক্রমণের প্রতিকার
- স্বাদ অক্ষুণ্ণ রেখে গোশত সংরক্ষণের উপায় - July 21, 2021
- পেঁয়াজের রোগ-বালাই ও এর দমন ব্যবস্থা – পর্ব ২ - July 18, 2021
- পেঁয়াজের রোগ-বালাই ও এর দমন ব্যবস্থা – পর্ব ১ - July 18, 2021