সাতকরা একটি লেবুজাতীয় ফল। এটি একটি অপ্রধান ফল। এই ফলের খোসা দিয়ে সিলেট অঞ্চলে প্রসিদ্ধ সাতকরার মাংস ভুনা রান্না করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন রকমের আচার তৈরিতে সাতকরা ব্যবহৃত হয়। সাতকরা গাছে বিভিন্ন পোকামাকড় ও রোগ দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। সতর্কতার সহিত এসব রোগ পোকামাকড়কে দমন করা জরুরি।
লিফমাইনার
এ পোকার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কীড়াসমূহ পাতার ভিতরে আকাবাকা সুড়ঙ্গ তৈরি করে সবুজ অংশ খেয়ে ফেলে। এতে সালোকসংশ্লেষণের হার কমে যায়। পাতা বিবর্ণ হয়ে ও কুঁকড়ে যায়, গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। এর ফলে ক্যাংকার রোগ দ্বারা গাছ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
দমনব্যবস্থা
গাছে নতুন পাতা গজানোর সময় রগর বা রক্সিয়ন বা পারফেকথিয়ন 40 EC ২ মিলিলিটার/লিটার পানি হারে মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর ২ বার স্প্রে করতে হবে। অথবা ম্যালাথিয়ন ১ মিলিলিটার/লিটার পানিতে মিশিয়ে একই পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা যেতে পারে।
লেমন বাটারফ্লাই
এ পোকার নিম্ফ কচি অবস্থায় পাতা খেয়ে ফেলে। এতে ফলন ও গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
দমনব্যবস্থা
লেমন বাটারফ্লাইয়ের ডিম ও নিম্ফ/কীড়াযুক্ত পাতা সংগ্রহ করে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে অথবা পুড়িয়ে ফেলতে হবে। সুমিথিয়ন 50 EC বা লিবাসিড 50 EC ২ মিলিলিটার/১ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০-১৫ দিন পরপর ১ বার স্প্রে করে দিতে হবে।
গামোসিস
এই রোগের আক্রমনে সাতকরার কান্ড, ডাল বাদামী হয়ে যায় ও ডালে লম্বালম্বি ফাটল লক্ষণীয় হয়। ফাটল হতে রেজিন বা উপক্ষার হিসেবে আঠা নিঃসৃত হয়।
প্রতিকার
আক্রান্ত ডাল কেটে ফেলতে হবে। অথবা আক্রান্তস্থানে বর্দো পেস্ট প্রয়োগ করতে হবে। এই রোগের আক্রমণ থেকে বাঁচতে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভাল থাকা জরুরি। এছাড়া পানি প্রয়োগের সময় ডালে স্পর্শ না করে। আরও জানুন সাতকরার আদ্যপান্ত।
ডাইব্যাক
আক্রান্ত গাছের পাতা ঝরে যায়। কচি ডাল শুকিয়ে যায়ম ফলে গাছে ডাল মরে যায়।
প্রতিকার
আক্রান্ত ডাল কেটে ফেলতে হবে এবং কেটে ফেলা অংশে বর্দো পেস্ট প্রয়োগ করতে হবে। আক্রান্ত গাছে ইন্ডোফিল M-45(0.2%) অতজবা বুর্ডেক্স মিক্সার (১%) স্প্রে করতে হবে।
- বাংলাদেশে পঙ্গপাল আক্রমণের সম্ভাবনা - July 10, 2020
- রকমেলন চাষ ও এর পরিচর্যা - July 6, 2020
- ঘরোয়া উদ্ভিদের রোগ-বালাই নিয়ন্ত্রণ – দ্বিতীয় পর্ব - July 3, 2020