লিচু বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় একটি ফল। উত্তরবঙ্গে উন্নত জাত ও সুস্বাদু লিচুর জন্যে পরিচিত। যদিও আমাদের আবহাওয়া লিচু চাষের জন্যে উপযুক্ত, তথাপি এই দেশে লিচু চাষ এখনো জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি তেমন।
লিচুর তেমন কোনো মারাত্মক রোগ দেখা যায় না। তবে আর্দ্র ও কুয়াশাযুক্ত আবহাওয়ায় পুষ্পমঞ্জুরি পাউডারি মিলিডিউ ও অ্যানথ্রাকনোজ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তা ছাড়া অনেক সময় ছত্রাকজনিত রোগের কারণে ফল পচে যায়।
মাজরা লিচুর অন্যতম শত্রু পোকা। পূর্ণ বয়স্ক পোকা হচ্ছে মথ। এ পোকার কীড়া ফলের বোটার দিকে গর্ত করে ঢুকে শাঁস ও বীজ খেয়ে ফেলে। এ পোকায় আক্রান্ত ফল বাজারে অপেক্ষাকৃত কম দামে বিক্রি হয়। কারণ ক্রেতারা এ পোকার ক্ষতির লক্ষণ বুঝতে পারে না। ফেব্রুয়ারি – এপ্রিল মাসে এদের আক্রমণ হয়ে থাকে।
লক্ষণ
পরিপক্ব অবস্থার বোঁটার দিকে খয়েরি রঙের গুঁড়ো গুঁড়ো দেখা যায়, পাকা লিচুর বীজ ছিদ্র অবস্থায় পাওয়া যায়। খোসা ছড়ালে শাঁস কিছুটা নষ্ট বা পচা দেখা যায় এবং ফলের ওপর কোন কোন জায়গায় ছিদ্র দেখা যায়।
গাছের ডালে গুঁড়ি গুঁড়ি মালার মতো দেখা যায়। হাত দিলে ডালের ওপর থেকে সেটি সরে আসে এবং নিচে ডালের মধ্যে ছিদ্র দেখা যায়। এটি মাজরা পোকার আক্রমণের লক্ষণ।
আরও পড়ুনঃ লিচুর মাইট দমন
সমন্বিত রোগের ব্যবস্থাপনা
ক) বালাই সহিষ্ণু জাতের লিচুর চারা লাগাতে হবে। অনেক গুলো লিচুর জাত রয়েছে যেগুলো লাগালে লিচু ফলের মাজরা পোকার আক্রমণ কম হয়।
খ) সুস্থ পোকামাকড় ও রোগবালাই মুক্ত চারা লাগাতে হবে।
গ) লিচু গাছের চারিদিক সর্বদা আগাছা মুক্ত রাখতে হবে।
ঘ) লিচুর ফল গুটি হওয়ার পর বা ফুল ফোটার ২০-২২ দিন পর থেকে ফল সংগ্রহ করা পর্যন্ত ১৫ দিন পর পর ২-৩ বার করে রিজেন্ট ৫০ এসসি/, রিপকর্ড ১০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
ঙ) মাইট দ্বারা আক্রান্ত গাছের শাখা- প্রশাখা ও অন্যান্য অংশ জুন ও আগস্ট মাসে প্রতি বছর ছাঁটাই করে পুড়িয়ে ফেললে এদের আক্রমণ কম থাকবে। মাকড় কম আক্রান্ত গাছে আগস্ট মাসে পর পর ২ বছর ছাঁটাই ও পুড়িয়ে এদের আক্রমণ ভারতের বিহারে কম রাখতে পেরেছে বলে জানা গেছে।
- স্বাদ অক্ষুণ্ণ রেখে গোশত সংরক্ষণের উপায় - July 21, 2021
- পেঁয়াজের রোগ-বালাই ও এর দমন ব্যবস্থা – পর্ব ২ - July 18, 2021
- পেঁয়াজের রোগ-বালাই ও এর দমন ব্যবস্থা – পর্ব ১ - July 18, 2021