Table of Contents
গত পর্বের পর…
1 ক্রোটন বা পাতাবাহার
ক্রোটন বা পাতাবাহারের রূপের কারসাজি অন্দরসজ্জায় বাড়তি সৌন্দর্য ছোঁয়া সৃষ্টি করলেও এর বিষাক্ত রস ও বীজ এই সংস্পর্শে থাকা অবস্থায় সৃষ্টি হতে পারে অ্যালার্জি কিংবা ত্বকের জ্বালাপোড়ার সমস্যা। এমনকি এই বিশেষ পাতাবাহারের রস কোনোক্রমে পেটে গেলে মানসিক বৈকল্য, বিরক্তিভাব, বমি বমি ভাব, বমি, মাথাব্যথা এমনকি কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যাও ঘটতে পারে। শুধু তাই নয়, ত্বকের কাটাছেঁড়ার মাধ্যমে ক্রোটনের রস রক্তে মিশে গেলে এবং দ্রুত চিকিৎসা করানো না হলে মৃত্যুও ঘটতে পারে।
2 অ্যাগলোনিমা
ক্রোটন কিংবা পাতাবাহারের মতোই পাতার উজ্জ্বল রং, নকশা, বৈচিত্র্য আর বিশেষ আকৃতির জন্য অন্দরসজ্জায় বিভিন্ন রকমের অ্যাগলোনিমার গ্রহণযোগ্যতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। তবে নান্দনিক এই অ্যাগলোনিমার রস মানবদেহের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। এমনকি বাগান পরিচর্যায় গাছের কোন বিশেষ অংশের সংস্পর্শে এলে চামড়ায় অচিরেই জ্বালাপোড়া সৃষ্টি হতে পারে এবং উদ্ভিদের রস চোখে গেলে তার মারাত্মক ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে।
3 অ্যাডেনিয়াম
শৌখিন ইনডোর প্ল্যান্টের মধ্যে অ্যাডেনিয়াম তার মনোমুগ্ধকর ফুলের বিচিত্রতা আর বিশেষ গঠনের কারণেই ঘরের কোণে কিংবা অন্দরসজ্জায় যোগ করছে আভিজাত্য। সৌখিন এ গাছের রস এক সময় ব্যবহৃত হতো আফ্রিকান বেশ কিছু ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর তীরের মাথায় বিষ দিতে। মূলত এই গাছের মূল, কাণ্ড ও শাখা-প্রশাখা থেকে দুধের মতো বিষাক্ত এক প্রকার রস নিঃসৃত হয়, যা ত্বক ও মিউকাস টিস্যুর মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে মারাত্মক নেশার সৃষ্টি করে। শরীরে এই রসের মাত্রা পৃথিবী মানুষ অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে এমনকি মৃত্যুও অসম্ভব নয়।
পড়ুন প্রথম পর্বটিঃ অসতর্কতায় আপনার ক্ষতির কারণ হতে পারে যেসব ইনডোর প্ল্যান্টস – পর্ব ১
4 মন্সটেরা
বড় বড় সবুজ পাতার লতানো গাছ—ঘরে বা বাইরে যেখানেই হোক না কেন, খুব সহজেই প্রকৃতির কাছাকাছি নিয়ে যায় মন্সটেরা। অথচ মনমুগ্ধকর এই বিশেষ উদ্ভিদ মন্সটেরার পাতার রস সংবেদনশীল ত্বক বা চোখে গেলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে থাকে। কোনোক্রমে মন্সটেরার পাতা ভুল করেছি চিবিয়ে ফেললে মুখ ও গলা ফুলে যাওয়া, কণ্ঠস্বর বিকৃতি, ঠোঁট ও মুখ অবশ হয়ে যাওয়ার মতো ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।
5 আজালিয়া
রৌদ্রবিহীন অঞ্চলেও চমৎকার ল্যান্ডস্কেপ তৈরিতে প্রধান কৃতিত্ব আজালিয়া ফুলের যা অন্দরসজ্জায় যোগ করেছে এক অনন্য ছোঁয়া। কেবলমাত্র ফুল নয়, বনসাইশিল্পেও আজালিয়া আদর্শ। তবে এই সৌন্দর্যমণ্ডিত উদ্ভিদে রয়েছে অ্যান্ড্রোমডোটক্সিন নামক এক প্রকার রাসায়নিক, যা সহজেই মানুষকে নেশায় আচ্ছন্ন করে এবং ধীরে ধীরে শরীর অবশ করে দেয়। এমনকি আজালিয়ার পাতা পেটে গেলে বিষক্রিয়ায় বমি, খিঁচুনি, পেটে ব্যথা শুরু হতে পারে পূর্ণবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে প্রায় ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত অজ্ঞান থাকতে পারে ।
6 অ্যালোকেসিয়া
বাংলার মাঠে-ঘাটে জন্মানো কচু গাছ তথা অ্যালোকেসিয়া সেমি–ইনডোর প্ল্যান্টস হিসেবে শহুরে অন্দরসজ্জায় বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এর বেশ কয়েকটি জাতের মধ্যে সবুজ রঙের মখমলে তৈরি বড় বড় পাতার মতো দেখতে অ্যালোকেসিয়ার দামটাও নার্সারিতে নিতান্ত কম নয়। তবে এই গাছের রাইজোম বিশেষত বিপজ্জনক। এর বিশেষ কিছু প্রজাতিতে বিষাক্ত স্ফটিক রয়েছে যা মূলত গলা শুকানোর জন্য দায়ী। এমনকি কচু গ্রহণে অনেক সময় জিহ্বা অবশ হয়ে যাওয়া, জ্বলুনি এমনকি গলা ও জিহ্বা ফুলে গিয়ে শ্বাসরোধে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
- স্বাদ অক্ষুণ্ণ রেখে গোশত সংরক্ষণের উপায় - July 21, 2021
- পেঁয়াজের রোগ-বালাই ও এর দমন ব্যবস্থা – পর্ব ২ - July 18, 2021
- পেঁয়াজের রোগ-বালাই ও এর দমন ব্যবস্থা – পর্ব ১ - July 18, 2021