Skip to content

ভার্মিকম্পোস্ট কী এবং কেন ব্যবহার করবেন

ভার্মিকম্পোস্ট হচ্ছে এক প্রকার জৈব সার যা কেঁচো কম্পোস্ট নামেও পরিচিত। কেঁচো উদ্ভিদ অথবা প্রাণিজ বর্জ্য, বাসী গোবর ইত্যাদি খেয়ে মল ত্যাগ করে এবং মলের সাথে কেঁচোর দেহ থেকে নিঃসৃত রাসায়নিক পদার্থ ও মিশ্রিত হয়। এই প্রক্রিয়াজাতকৃত উপাদান কেই ভার্মি কম্পোস্ট বলা হয়।

ভার্মিকম্পোস্ট তৈরি হতে কেঁচোর প্রজাতি, পরিবেশ ভেদে ৩০-৯০ দিন সময় লাগেতে পারে। নির্দিষ্ট প্রজাতির কিছু কেঁচো পঁচনশীল আবর্জনা, খড়কুটো, ফসল কাটার পর অবশিষ্টাংশ ইত্যাদি খেয়ে মল ত্যাগ করে এবং কেঁচোর দেহের রাসায়নিক পদার্থ এই জৈব পদার্থের সাথে মিশ্রিত হয়ে গুণাগুণ আরো বাড়িয়ে দেয়। সার তৈরি হয়ে গেলে কেঁচো আর ঝুরঝুরা কম্পোস্ট আলাদা করে নিতে হবে।

উপাদান

ভার্মিকম্পোস্টে গাছের অত্যাবশ্যকীয় ১৬টি খাদ্য উপাদানের ১০টিই বিদ্যমান।

আদর্শ ভার্মিকম্পোস্টে –

  • ১৮% জৈব কার্বন
  • ২.৬০% পটাশ
  • ২% ক্যালসিয়াম
  • ১.৫৭% নাইট্রোজেন
  • ১.২৬% ফসফরাস
  • ০.৭৪% সালফার
  • ০.৬৬% ম্যাগনেশিয়াম
  • ০.০৬% বোরণ
  • ১৫-২৫% পানি ও সামান্য পরিমাণ হরমোন রয়েছে।

ভার্মি কম্পোস্টে অন্যান্য যে কোন কম্পোস্টের চেয়ে প্রায় ৭-১০ ভাগ পুষ্টিগুণ বেশি থাকে। তাই অন্য যেকোন ধরনের কম্পোস্ট ব্যবহারের চেয়ে ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহার সুবিধাজনক। এ সার ব্যবহার করলে –

  • ফসলের উৎপাদন ও গুণাগুণ বৃদ্ধি পায়
  • মা‌টির পা‌নি ধারন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ফলে সেচ কম লাগে।
  • মাটিতে বায়ু চলাচল বৃদ্ধি পায়। ফলে মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়।
  •  বিভিন্ন অনুজীবনের পরিমাণ বাড়ায় ফলে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়।
  • রোগ বালাই এবং পোকামাকড়ের উপদ্রব কম হয়।
  • মাটির পিএইচ নিয়ন্ত্রন ক‌রে এবং আগাছা কম হয়।

ব্যবহারের নিয়ম

ফুল, ফল, শাক সবজি, ধান, গম, ভুট্টা ইত্যাদি অর্থাৎ প্রায় সব ধরনের গাছেই ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহার করা যায়। তবে সঠিক পরিমাণে ব্যবহার করা জরুরী।

  • টব বা ড্রামে নতুন মাটি তৈরীর ক্ষেত্রে মাটি এবং ভার্মিকম্পোস্ট ৭:৩ অনুপাতে অর্থাৎ প্রতি ১০০ কেজিতে ৭০ কেজি মাটি এবং ৩০ কেজি ভার্মিকম্পোস্ট ব্যবহার করতে হবে।
  • টবে গাছ প্রতি ১০০-২০০ গ্রাম এবং বাগানের গাছ প্রতি ২০০-৫০০ গ্রাম ভার্মিকম্পোস্ট প্রায়োগ করতে হবে।
Vermicompost 1
ভার্মিকম্পোস্ট
  • কৃষি জমি এবং সবজি বাগানে প্রতি হেক্টরে ৩-৪ টন ও ফল গাছের ক্ষেত্রে প্রতিটা গাছে ৫-১০ কিলোগ্রাম করে ব্যবহার করা হয়। ফুল বাগানের ক্ষেত্রে প্রতি  হেক্টর জমিতে ৫-৭.৫ কুইন্টাল ভার্মিকম্পোস্ট ব্যবহার করতে হয়।
  • মাঠ ফসল যেমন ধান,গম,পাট ইত্যাদিতে শতক প্রতি ১.৫ কেজি এবং ভুট্টা চাষে শতক প্রতি ২.৫ কেজি ভার্মিকম্পোস্ট ব্যবহার করতে হবে।
  • ছাদবাগানের ক্ষেত্রে গাছে স্প্রে করেও ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহার করা যায়। এক্ষেত্রে প্রতি ২০ লিটার পানির জন্য ১ কেজি ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহার করে মিশ্রণ বানিয়ে নিয়ে ছেঁকে নিতে হবে। এবার এই মিশ্রণ টিকে প্রতি ১০ দিন অন্তর পুরা গাছে স্প্রে করতে হবে এবং স্প্রে শেষে মিশ্রণটি গাছের গোড়ায় ঢেলে দিতে হবে।
  • পুকুরের পানিতে মাছের প্রয়োজনীয় খাদ্যের যোগানের জন্য ভার্মিকম্পোস্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। কারণ কেঁচো সার ব্যবহারে পুকুরের পানিতে  ফাইটোপ্লাঙ্কটনের পরিমাণ অনেক বেড়ে যায় যা মাছের জন্য পুষ্টিকর আহার হিসাবে কাজ করে।

ছাদবাগানের ক্ষেত্রে প্রতি ২-৩ মাস পর পর টবের উপরের মাটিতে ভার্মি কম্পোস্ট মিশিয়ে দিতে হবে এতে করে গাছের বৃদ্ধি ভালো হবে।

আরও জানুনঃ ভালো ক্যাকটাসের মাটি কই পাবেন?

কেন ব্যবহার করবেন?

সাধারণত মাটিতে যে পরিমাণ জৈব পদার্থ থাকার কথা অধিক পরিমাণ রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে আমাদের দেশের মাটিতে তার চেয়ে অনেক কম পরিমাণে জৈব পদার্থ আছে। দেশের আবাদি জমির মধ্যে ৬০ ভাগেরও বেশি জমিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ ১.৭ ভাগেরও নিচে নেমে গেছে।

ভার্মিকম্পোস্ট কিনুন গ্রিনিকালচার থেকে

এমতাবস্থায় ভার্মি ম্পোস্টের ব্যবহার একদিকে যেমন মাটির জৈব পদার্থের পরিমাণ বাড়াবে অন্যদিকে খরচ ও অনেক কমিয়ে দিবে। এই সার ব্যবহারের ফলে রাসায়নিক সারের ব্যবহার ৫০ ভাগ পর্যন্ত কমিয়ে আনা সম্ভব। আবার ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহারে গাছ ধীরে ধীরে কিন্তু ক্রমাগতভাবে পুষ্টিউপাদানগুলো পেতে পারে যা কিনা ছাদ ও বেলকনি বাগানের জন্য আদর্শ।

সংরক্ষণ

শুষ্ক এবং ছায়াযুক্ত স্থানে সংরক্ষণ করতে হবে। বস্তায় মুখবন্ধ অবস্থায় ১ বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।

কোথায় পাওয়া যাবে?

সর্বোচ্চ উপকার পাওয়ার জন্য সর্বোত্তম মানের ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহার করতে হবে। ভেজাল এবং ক্ষতিকর অনুজীবমুক্ত ভার্মি কম্পোস্টের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন Greeniculture Agrotech Limited এর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ অথবা ওয়েবসাইটে

2 thoughts on “ভার্মিকম্পোস্ট কী এবং কেন ব্যবহার করবেন”

    Advertisements
  1. Pingback: ভালো ক্যাকটাস মাটির আদ্যোপান্ত | Greeniculture

  2. Pingback: ভার্মিকম্পোস্ট কী এবং কেন ব্যবহার করবেন - Gardenxpert

Leave a Reply